রাত এখন কোপার কোপে। যাঁরা জানেন, তাঁরা তো জানেনই। আর যাঁরা আমার মত, বুঝতে
না পারলে মুচকি মুচকি হাসেন, আর ভান করেন যেন সব বুঝেছেন, তাঁদের বলি, কোপা হলো
কোপা আমেরিকা। আমেরিকা কাপ। ফুটবলের আসর। লাতিন ফুটবলের ধুন্ধুমার লড়াই। গেল
হপ্তায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বার্সিলোনা – জুভেন্তাস ঘটে গেছে। শেষ রাতে সেই
নিয়ে ফোনে মেসেজ চালাচালি করতে গিয়ে দেখলুম, অনেক বড় বড় ফুটবলপ্রেমীই কেমন যেন আড়ো
আড়ো ছাড়োছাড়ো করছেন। সকালে বাসে অফিস যাবার সময় নিত্যযাত্রিদের জোরদার আলোচনায়
দেখলুম বার্সিলোনা, কোপা, এমন কি হিউমের আতলেতিকো কলকাতায় যোগদানের
আলোচনাও কেমন যেন ঝিমিয়ে। শেষে বলেই ফেললুম, হলোটা কি? কোপা তে
মেসি-নেইমার-সাঞ্চেজ-সুয়ারেজ, আর সবাই এত ঠান্ডা? হই হই করে উত্তর এলো – বেলো টা
চলে গেল যে, বল্লুও নাকি যাবে যাবে করছে...। অন্য দিক তাক করেই ছিলো, এবার দাগল –
তোদের সঞ্জয় সেন তো আছে রে ভাই, ওটাই আসল, কাতু-সোনি উপরি। ব্যাস। বুঝলুম ফুটবল
আছে ফুটবলেই। শুধু টিভির পাশে, পাশের মাঠের ছোঁয়ার আরো রঙিন হবার চেষ্টা চলছে
মাত্র।
বেশ কয়েক দিন পার হয়ে গেছে। যা যা বলার, লেখার, সবাই সব বলে বা লিখে ফেলেছেন। আমার
মত অকিঞ্চিত অর্বাচিনের মন্তব্য ধর্তব্যের মধ্যেই নয়। কিন্তু তবুও, ভেবে দেখুন,
সবুজ মেরুন ষোলো নম্বর জার্সির ঝাঁকড়া চুলো বাবলু ভটচায্যি অসম মহড়া নিয়ে পেলেকেও
পেনাল্টি বক্সে পা রাখতে দেয়নি, আমিও সেই কেলাবের মেম্বার তো বটি। কাজেই বাঘ
সিঙ্গির ভিড়ে দু কথা কইতে আমার ও ইচ্ছে জাগতে পারে। ২০০২ সালে যেবার মোহনবাগান
জাতীয় লীগ জিতে কলকাতা ফিরলো, সেই রাতটা আমার স্পষ্ট মনে আছে। দমদম থেকে আবীর,
বাজি-পটকা, ফুল, লাখ খানেক লোকের ভিড়, এসব তো ছিলোই। কিন্তু আমি বলছি রাতের কথা।
পাড়ায় পাড়ায় পতাকা উড়ছে, মাইক বাজছে, খাওয়া দাওয়ার আয়োজন চলছে। স্বতঃস্ফুর্ত
ফুর্তি। নির্মল আনন্দ। সে রাতে ঘুম হয়নি। ঘুম হয়নি। ঘুম হয়নি তার পরে একের পর এক
রাতে, সপ্তাহে, মাসে বছরে। পরের তেরো বছরে।
কি করতে
বাকি রেখেছে মোহনবাগান? দেশের সেরা স্ট্রাইকার এসেছে, ক্লাবে নির্বাচন হয়েছে, মাঠ মেরামত
হয়েছে। মামলা-মোকদ্দমা অনেক কমে এসেছে। অলিভার কানের শেষ ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু কই?
জাতীয় লিগ তো আসেনি তাঁবুতে। গান বেরিয়েছে একের পর এক। এগারো নামের ছবি হয়েছে মোহনবাগানকে নিয়ে। অবনমন বাঁচানোর খেলায় মাঠে সত্তর হাজার মানুষের উপস্থিতি রেকর্ড গড়েছে। ইষ্টবেঙ্গলের
গোলে ৯০ মিনিটে পাঁচবার বল ঢোকানো হয়েছে। রকমারি জার্সি বদল হয়েছে। কিন্তু দিন বদলায়নি।
একটা নতুন প্রজন্ম এসে গেছে, যারা মোহনবাগান কে জাতীয় লিগ চাম্পিয়ন হতে দেখেনি কখনো।
কত কিছুই হয়েছে, কিন্তু দিনে দিনে আরো খাদের দিকে এগিয়ে গেছে সবুজ মেরুন ক্লাব। গত
চার বছর কোন ট্রফির দেখা পাইনি। টিটকিরি, টিপ্পনি, গালাগাল, এসব তো ছেড়েই দিলাম, কিন্তু
আবার কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারার আশা, পাল্টা লড়াই তুলে আনার সম্ভাবনাগুলোই আস্তে আস্তে
ঝাপসা হতে শুরু করেছিলো। অনেক অভিমানে আইএসএল দেখতে লাল সাদা জার্সি পরে মাঠে বসেছিলাম।
মন বলেছিলো, এ জার্সি তোকে মানায়না ভাই। এ রঙ চাপিয়ে দেওয়া। তোর চামড়ার নয়।
বন্ধুবর
অনিরুদ্ধ, বিদেশ থেকে ফোন করে ফেলল সেদিন, যেদিন ইষ্টবেঙ্গল কলকাতা লিগের খেলায় হারালো
মোহনবাগানকে। একটা চল্লিশ বছরের লোক হাউ হাউ করে কাঁদছে। “কি করিস তোরা? হালায় ক্লাবটারে
ভালোবাসিস না?”। আজ্ঞে হ্যাঁ, অনি বাঙাল, আর আবেগের সময় খাশ ঢাকাইয়া বুলি ফুটে বেরোয়।
বাকি সময় ওর অবশ্য শান্তিপুরি বলতে সমস্যা হয়না । অনির ঠাকুরদার বাবা নাকি ১৯১১ সালে
শিল্ড জেতার দিন মাঠে ছিলেন। ওর মতে “আমার মত কুলিন মোহনবাগানি আর কেডা আসে রে?”। ওদের
গুষ্টিসুদ্ধু সব মোহনবাগান মেম্বার। কিন্তু চুড়ান্ত বদঅভ্যেস, ওর কোনো ফেসবুক নেই,
ইমেল করলে বছর দেড়েক পরে উত্তর পাবেন। হোয়াট্সঅ্যাপের নাম শোনেনি। সুইডেনে
গোথেনবার্গ শহরে থাকে। সে এ লেখা পড়বে কিনা জানিনা। পড়লে হয়ত আর একটা ফোন পাবো। এই
সব কাগুজে প্রচার “নই আমি মারাদোনা নই আমি পেলে, আমি খাস ঘটি, মোহনবাগানের ছেলে”
যতই করা হোক, মোহনবাগান উত্তর কলকাতার ঘটি একাদশ কোনোকালেই ছিলোনা, হবেও না।
মোহনবাগান সবার। ঘটি, বাঙ্গাল, বাঙালি, অবাঙালি, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, শিখ,
বৌদ্ধ, মোহনবাগানে এইসব ভাগ কোনকালেই ছিলোনা, আর হতে দেওয়াও হবেনা। চুনোট ধুতি আর
বেড়ালের বিয়ে দেওয়া বাবুয়ানির ক্লাব ছিলো শোভাবাজার। সে ক্লাব কবেই ইতিহাসের
বাদামী পাতায়। মোহনবাগান চিরকাল সাধারন মানুষের ক্লাব। এই সব আজে বাজে বস্তাপচা
প্রচারে মোহনবাগানিরা কান না দিলেই ভালো।
তেরো বছর লিগ নেই। গত চার বছরে কোনো ট্রফি নেই। তার পরে জাতীয় লিগ। সবার আগে
কোচ ও খেলোয়াড়, তার পরে কর্মকর্তারা। এনাদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করতে চাইনা। যে জন-বিস্ফোরন
ও আবেগের স্রোতে কলকাতা ও দেশ ভেসে গেল লিগ জয়ের পরে, সেটা এনারা সকলে আজন্মকাল
মনে রাখবেন। কিন্তু আমাকে আশ্চর্য্য করেছে সাধারন মোহনবাগানি সমর্থককূল। বছরের পর
বছর ট্রফি নেই। লিগে অবনমন বাঁচাবার লড়াই। বড় ম্যাচে জয় নেই। চার বছর কোন ট্রফি
নেই। আজকে যাদের বয়স ১৬-১৮, তারা তো সেই অর্থে মোহনবাগান কে জিততেই দেখেনি। কিন্তু
তবুও কোথা থেকে আসে এই আবেগ? উৎস কি এই উন্মাদনার? কোথা থেকে আসে “ঠিক পারবো,
জিতবোই” এই বুক বাজিয়ে বলা বিশ্বাস? কি জানি বাপু। এ কেমনতর আবেগ? যা এই রকম
ছ্যাতলাপড়া পারফরমেন্সেও জ্বলজ্বল করতে থাকে, দাউ দাউ করে পুড়িয়ে দিতে থাকে। এই
জয়, এই বিশ্বাস, এই আনন্দ যদি মনের ভেতর থেকে কাউকে দিতে পারি, তো দেব মোহনবাগান
সমর্থকদের। এই সমর্থকরাই আসল নায়ক, হিরো, সুপারম্যান এবং সুপারউওম্যান। সাবাস
মোহনবাগানী।
“স্লোগান দিতে গিয়ে, আমি বুঝেছি এই সার,
সাবাস যদি দিতেই হবে, সাবাস দেবো তার,
ভাঙছে যারা, ভাঙবে যারা খ্যাপা মোষের ঘাড়“
এগারো সংখ্যাটা প্রতিটি মোহনবাগানীর পরম গর্বের আর আদরের। বাকিদের জানিনা,
এবার থেকে তেরো সংখ্যাটা আমার কাছে খুব গর্বের হয়ে থাকবে। এই তেরোটা বছর, ইতিহাসে
থেকে যাক সমর্থকদের যুগ হিসেবে। কি ভাবে আবেগ জ্বালিয়ে রেখে অপেক্ষায় থাকা যায়,
তার জ্বলন্ত প্রমান হিসেবে।
৩১শে মে, মাঝরাতে সবাই তখনো খুব আনন্দ করছে। হই হুল্লোড় চলছে। আমি কিন্তু
আস্তে আস্তে বিছানায় গিয়ে শুয়েই ঘুমিয়ে পড়েছি। শান্তির ঘুম। মোহনবাগান আবার নিজের
জায়গায় ফেরত এসেছে।
উন্মাদনা আর ভালোবাসাটা বেশ সুন্দর ফুটে উঠেছে। অপেক্ষা, আর অপেক্ষার অবসানে নিশ্চিন্তিটাও বেশ পরিস্কার। বেড়ে।
উত্তরমুছুনতবে, একটা কথা, আর সেটা ঠিক লেখাটার মান নিয়ে নয়।
নিশ্চিন্তে ঘুম তো হল আমাদের অনেকেরই হয়ত, কিন্তু এবার বোধহয় আবার গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার সময়, আর এটা দেখার সময় যে যাতে ভারতীয় ফুটবলটা শুধুমাত্র আবেগের উপর দাঁড়িয়ে না থাকে, একটা মানে যেন পৌঁছই আমরা এবার। অনেকদিন তো হল, মানটাও তো এবার একটু বাড়াতে হবে!!
একটা মান যখন ফিরেছে, অন্যটাও ফিরবে। কাগজে পড়লুম মোহনবাগান - বেঙ্গালুরু খেলার দিন ১৪৭ জন বিদেশী বুকি বাজি খেলেছিলো শুধু ফিফার হিসেবে। এরা ফিফা তে নথিভুক্ত বুকি। একেবারেই কিছু না থাকলে এই সংখ্যাটা থাকতো না।
মুছুনএকেবারে নেই তা তো নয়, কিন্তু যথেষ্ট আছে কি? বা যতটা হওয়া উচিৎ? বাকি দেশ আর ক্লাব এগিয়ে গ্যাছে, আমরা পড়ে আছি। আমার মতে, দুরবস্থাটা মেনে নিয়ে এবার এগোনো উচিৎ। আমার মত এই দুটি গালি দিয়ে নয়, যারা সত্যিই উৎসাহী, তারা কিছু করলে আমরা মানে এগিয়ে যাব।
মুছুনজয়ের পরের দিন দেবাশিষ দত্ত টিভিতে একটা খুব দামি কথা বলেছেন। বলেছেন এই জয়টা শুধু মোহনবাগানের জয়। এটাকে বাংলার ফুটবল, ভারতের ফুটবল, আইএসএলের ওপর আই লিগের জয় বলে না চালানোই ভালো
মুছুনসমর্থক দের নিয়ে এমন অনবদ্য লেখা শেষ কবে পড়েছি মনে করতে পারলাম না। খেলাকে ভাল না বাসলে এমন অনুভব দিয়ে লেখা যায় না। কবে যে তেরটা বছর কেটে গেছে শুধু জয়ের অপেক্ষায় তা মনে হয় এত ভাল করে না লেখা থাকলে পাঠকরাও এই ব্যাপারটা ভাবতেন না। সেদিক থেকে লেখাটা হয়ে উঠল ঐতিহাসিক। লেখক কে নিচের পাঁচ লাইন যা বুঝেছি লেখা টা পড়ে।
উত্তরমুছুনমোহনবাগান আবার জিতল তের বছর পর
সারারাত বাজি পুড়ল সেদিন মে একত্রিশ
শান্তিতে ঘুমালাম, নেমে গেল বিষ
ভুলে গেলাম সমস্ত আপন ও পর
মোহনবাগান আবার জিতল তের বছর পর।
"ভুলে গেলাম সমস্ত আপন ও পর
মুছুনমোহনবাগান আবার জিতল তের বছর পর।"
ভুলবো না...... এই লাইন দুটো ভুলবো না...
অনবদ্য লিখেছেন । তবে সে রাত্রে ঘুম আসেনি একদম। এতো শান্তির বিনিদ্র রজনী কোনোদিন কাটিয়েছি বলে মনে পড়ে না। চার বছরের ট্রফিহীনতা অবনমণ সব চোখের সামনে ভীড় করে আসছিল। অভিশপ্ত দিনগুলো পেরিয়ে এসে ফেলে আসা পথটা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কতটা রক্তাক্ত হয়েছি আমরা। আমার বয়স বেয়াল্লিশ মোহনবাগানের অনেক জয় দেখেছি আগের তিনটে জাতীয় লীগ জয়ের স্মৃতিও যথেয্ট টাটকা। আগে জেতার পর খুব শান্তির ঘুম ঘুমোতাম। এবারেরটা একটু অন্যরকম । জেগে থাকাটা সারারাত তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলাম।
উত্তরমুছুনমোহনবাগান জিতলে, এখন, আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি যেটা অনুভব করি, সেটা শান্তি, স্বস্তি। একটা হাঁফছাড়া ভাব। অনেক অনেক কাল পরে। আবার এরকম লাগছে।
মুছুনFootball ami bujhina....kintu football er proti valobasha ta bujhte parlam.
উত্তরমুছুনফুটবলের মজাতো এটাই। বোঝার তেমন কিছু নেই। সব চেয়ে সোজা খেলা।
মুছুনদারুন হয়েছে লেখাটা। ফুটবল ও মোহনবাগানের প্রতি আবেগটা লাইন ছাপিয়ে বেরিয়ে এসেছে। খুব ভালো লাগল পড়ে।
উত্তরমুছুনমোহনবাগান আমার নিজস্ব ব্যক্তিস্বত্তায় ঢুকে বসে আছে
মুছুনতোর মোহন প্রীতি অতুলনীয় সেই স্কুল জীবন থেকে দেখছি .... লেখার বুনন জমজমাট .... খেলা নিয়ে কোন কথা বলবনা কারণ আমি ও রসে বঞ্চিত ......
উত্তরমুছুনতোরা আমার অনেক পাগলামোর সাক্ষি :)
মুছুনখুব ভাল লাগলো.অনেকদিন পরে এরকম একটা লেখা পড়লাম,
উত্তরমুছুনআবার যেন আমাদের অনেক দিন না অপেক্ষা করতে হয়
মুছুনঅনেক অভিমানে আইএসএল দেখতে লাল সাদা জার্সি পরে মাঠে বসেছিলাম। মন বলেছিলো, এ জার্সি তোকে মানায়না ভাই। এ রঙ চাপিয়ে দেওয়া। তোর চামড়ার নয়।
উত্তরমুছুনEkdom moner Kotha bole dile Somnath da.
Osadharon hoyechhe.
অন্য রঙ সত্যিই মানায় না আমাদের সুমিত।
মুছুনখাসা লিখেছেন দাদা...দারুণ। :)
উত্তরমুছুনখাসা খেলেছে মোহনবাগান। :)
মুছুনMohunbagan amar rokter sathe mishe gache.13 yra er glani aj bilin.e lkha pore 31 May2015 rater motoi ak nirmol anando r prasanti amake vasie dieche.advut sundor triptota. Serar sera line "অনেক অভিমানে আইএসএল দেখতে লাল সাদা জার্সি পরে মাঠে বসেছিলাম। মন বলেছিলো, এ জার্সি তোকে মানায়না ভাই। এ রঙ চাপিয়ে দেওয়া। তোর চামড়ার নয়।".e lekha upohar deoar janya buk vora sabuj maroon selam r krnish.. Amader jersey lal-sada noy.amader surjo maroon , narir joge sabuj ghase...
উত্তরমুছুনএই তোমার মত মোহনবাগানী আছে বলেই ৫০ বছর ট্রফি না পেলেও মোহনবাগান স্বমহীমাতেই থাকবে।
মুছুনR e lelhate ro akta sundor dik " mohunbagan sabar, kono elit class er janya noy". Sedin celebration e dekhechi beleghatar bostir chelera satheo MD Dr, corporate officer , sarkari chakure ,70 year retired ememployee, barir grihobodhu, college pora jubati, sabai sabuj maroon anande ga vasieche sob kaj fele rekhe...amar kache abeger r ak num mohunbagan.
মুছুন