বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০১৪

প্রজ্ঞা থাপার ছোট্ট জীবন

প্রজ্ঞা থাপা ক্লাস টেনের ছাত্রী। স্কুলে খেলাধুলোয় রীতিমত নাম আছে তার। পড়াশোনাতেও প্রজ্ঞা পেছিয়ে নেই সে কোনো ভাবে। বাবা থাকেন দেশের বাইরে, বাহরিনে। প্রজ্ঞা দেশের বাড়িতে মা কল্পনা থাপা আর দাদুর সঙ্গে থাকে আর ইটাহারির স্থানীয় মর্নিং স্টার স্কুলে পড়ে। মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার, তেমন অস্বাচ্ছন্দ কিছুই নেই। এই মেয়েটি ২০১৪ সালের ৯ই জুলাই খবরের শিরোনামে চলে এলো।

রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত লিখেছিলেন “ফুটবল”। একটা নাটক। সে নাটক কতজন দেখেছেন জানিনা, কিন্তু সে নাটকে দেখানো হয়েছিলো এক দায়িত্বজ্ঞানহীন এক হিংস্র আক্রমন। সে নাটকের সমসাময়িক ঘটনা ১৯৮০ সালের ১৬ই আগস্ট, যেদিন ইডেনে মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল খেলায় দাঙ্গায় ১৬ জন মারা গিয়েছিলেন। তার পরে সামান্য কিছু হইচই হয়েছিলো। দু দলের সমর্থক দের খেলার সময় আলাদা আলাদা বসানোর ব্যবস্থা হয়েছিলো। সে ব্যবস্থা এখনো আছে। লিগের প্রথম বড় খেলায় এখনো লোকে জিজ্ঞেস করে – “আমাদের কি ১ নম্বর আর ২ নম্বর? নাকি তিন চার দিয়েছে আমাদের?”। অনেকটা তফাত করে বসানো। ঘেটোর মত। মাঝখানে কাঁটাতার, অস্ত্র নিয়ে পুলিশ। ১৯৯৮ সালে দুই বন্ধু অফিসে একসঙ্গে ঢপ মেরে আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল দেখতে গেছি একই ট্যাক্সিতে চড়ে, ভাড়া ভাগাভাগি করে। কিন্তু মাঠে পৌঁছে ও গেলো ওদিকে, আর আমি গেলাম এদিকে। এক সঙ্গে বসে খেলা দেখা গেলো না, কারন দু জন দু দল কে ভালোবাসি। এসব তো থাকবেই। মাঠে ঢোকার আগে, দুজনে দুজনকে “অল দ্য বেস্ট” জানাতেও ভুলিনি।

ফুটবল ভালোবাসি বলেই না দলকে ভালোবাসি, ফুটবলে উৎসাহ না থাকলে আর এ দল, ও দলের প্রশ্নই আসবে কেন? মনে আছে, আরো অনেক ছোটো বেলায়, বাবার হাত ধরে সন্ধের মুখে মিস্টির দোকানে যাচ্ছি মিস্টি কিনতে। বড় খেলায় জিতলে বাবা এক হাঁড়ি গরম রসগোল্লা কিনে খাওয়াতো লোকজন কে। আর এটাকে বলতো মধুরেন সমাপয়েৎ। সেদিন পাড়ার আর একটি ছেলেকে দেখে, খেলায় হারা নিয়ে একটা টিটকিরি মেরেছিলাম দোকানের সামনে। আমি তখন ক্লাস থ্রী কি বড়জোর ফোর। কান থেকে ঠোঁট ঝন্‌ঝন্‌ করে উঠেছিলো বিরাশি সিক্কা থাপ্পড়ে। মিস্টির ফরমায়েশ তদ্দন্ডেই বাতিল। কানের কাছে গম্ভীর স্বর শুনেছিলাম বাবার – “নিজেকে কখনো মোহনবাগান সমর্থক বলে পরিচয় দিওনা”। সারা জীবন অসম্ভব ফুটবল পাগল একজন মানুষের কাছে ধীরে ধীরে শিখেছি, খেলাকে কি ভাবে ভালোবাসতে হয়। প্রতিপক্ষকে কি ভাবে সন্মান দিতে হয়। খেলায় জয় মানে নির্মল আনন্দ। অহংকার বা জীঘাংসা নয়। পরাজিত পক্ষ, কেবলমাত্র প্রতিপক্ষ, কখনই আজকের খবরের কাগজের ভাষায় শত্রুপক্ষ নয়। আজকে জিতলে, কালকে হারতেই হবে তার কাছে। এটাই খেলা। আর হেরে যাবার স্বাদ, আপনার প্রতিপক্ষের চেয়ে ভাল আর কেউ জানবেনা, কেননা খেলায় সকলকেই হারতে হয়েছে। আমাদের অফিসে আমরা একটা প্রথা চালু করেছিলাম। যাদের দল খেলায় জিতবে, তারা অন্যদের খাওয়াবে। এই খাওয়ানোর মধ্যে দিয়ে দেখতাম জেতার ঝুঠো অহংবোধ আর হারের ঝুঠো গ্লানির পরিসমাপ্তি হতো। ২০০৬-০৭ পর্য্যন্ত এটা চলতে দেখেছি।

গতকাল একটি ছেলের প্রশ্ন – “আমি কি তাহলে গায়ে পতাকা জড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়ে মরব? ব্রাজিলের খেলা ভালো লাগাটা কি আমার অপরাধ? কেন আমার ওপর এই হিংস্র আক্রমন? এর পর তো বাড়িতে ঢুকে মারবে”। না, বাংলার রাজনীতি নয়, ভোট নয়, সমাজবিরোধী আক্রমন বা সাম্প্রদায়ীক সন্ত্রাস নয়। একটা খেলার ফলাফল, এবং তৎপরবর্তী কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছেলেটিকে এই ভাবে মানসিক অত্যাচার সয়ে সকলের চোখের আড়ালে লুকিয়ে গুটিয়ে থাকতে হচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায়, অফিসে, স্কুল কলেজে সর্বত্র এই হিংস্র আক্রমন। তবে বোধহয় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে ফেসবুক , হোয়াট্‌স্‌অ্যাপ জাতীয় সামাজিক মেলামেশার জায়গা গুলো। আমাদের দেশে শুনি ক্রিকেট হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। সে নিয়ে আমার নিজের কোনো সন্দেহ নেই। কিছু দিন আগে আইপিএল শেষ হলো। গোটা দেশ সেই নিয়ে মেতে ছিলো। ক্রিকেটের বিশ্বকাপ যখন হয়, তখন দেখেছি, কি চরম উৎসাহ, উন্মাদনা, উত্তেজনা। কিন্তু যেটা দেখিনি সেটা হলো এই হিংস্রতা। সত্যি দেখিনি। বরং অন্য দলের খেলোয়াড় ভালো খেললে তার প্রশংসা শুনেছি। খেলায় হার জিত নিয়ে টিটকিরি দেখেছি, উল্লাস দেখেছি, স্বপ্নভঙ্গ দেখেছি। কিন্তু কোথাও শুনিনি, কেউ এই ভাবে অন্যজনের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। এটা অন্য খেলায় হয় না।

আমাদের পাড়ায় বিশ্বকাপের ঠিক আগে থেকে দেখলাম বড় বড় রঙিন পতাকা ঝুলছে। কতগুলো নীল সাদা, সে গুলো আর্জেন্তিনার, আর কতগুলো হলুদ সবুজ সে গুলো ব্রাজিলের। দেখে খুব ভালো লাগলো, যে আমাদের এখানে ফুটবলের নামে লোকজন কতটা মেতে উঠেছে। ব্রাজিল বা আর্জেন্তিনা খেলায় জেতার পর মাঝরাতে পটকা ফাটা শুনেও ভালো লাগছিলো, কিন্তু সেই সঙ্গে খারাপ লাগছিলো, যে এই যে বিশ্বকাপে ক্যামেরুন খেলছে, গত বছর দিল্লিতে যখন এই ক্যামেরুনকে হারালো ভারত, তখন একটাও পটকা ফাটলো না। একটাও তেরঙ্গা ঝান্ডা উড়লো না। ফেসবুক হোয়াটস্‌অ্যাপ ছয়লাপ হয়ে গেলো না সুনিল ছেত্রি বা সুব্রত পালের ছবিতে। পেছিয়ে থেকেও সমতা ফিরিয়ে এনে ভারত হারালো বিশ্ব ফুটবলের এক সাড়া জাগানো শক্তিকে, কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি, যাঁরা এই লেখা পড়ছেন, তাঁদের সিংহভাগ ভারতেই এই সাফল্যের কথা জানেনই না। আমি নিচে লিঙ্ক দিলাম, গোটা খেলা, এবং টাইব্রেকারের।
প্রথমার্ধ – https://www.youtube.com/watch?v=qM7DK0pwYVw
দ্বিতীয়ার্ধ – https://www.youtube.com/watch?v=mZXFJFp5b0k
টাইব্রেকার - https://www.youtube.com/watch?v=MZ6O-7yRkTo

আবার অন্যদিকে এই বছরের গোড়ায় কাঠমান্ডুতে যখন ভারত নেপালের কাছে ১-২ গোলে হেরে গেলো, সেদিন সন্ধ্যায় অফিসে বসে মনে হচ্ছিলো অনেক অনেক অনেক কিছু যেন হারিয়ে গেল। অনেক স্বপ্ন আবার গোড়া থেকে দেখতে শুরু করতে হবে। পেছিয়ে গেলাম যেন আমরা। রাত্রে কিছু খেতে পারিনি সেদিন বাড়ি গিয়ে। আমি এবারেও নিশ্চিত, এ লেখা যাঁরা পড়ছেন, তাঁদের সিংহভাগ এ খেলার খবর ও রাখেন না।

তাহলে ব্রাজিল আর্জেন্তিনা নিয়ে এই সাংঘাতিক রেশারেশির উৎস কোথায়? দয়া করে এটা বলবেন না যে এই দুটো দেশের কিছু ইশ্বরতুল্য খেলোয়াড়ের জন্যই এই রেশারেশি। খেলোয়াড়ের খেলা ভালো লাগলে তিনি যে দলের জার্সিই পরুন, তাঁর খেলা ভালো লাগতে বাধ্য। সেখানে ব্রাজিল আর্জেন্তিনা আসেনা। আর তা ছাড়া এই দু দেশ বাদে অন্য দেশে তেমন কোন খেলোয়াড় নেই, এটাও মানতে পারছিনা। আমার দেখা এই উত্তেজনা তৈরির নেপথ্যে সংবাদ মাধ্যম। আমাদের দেশের এবং গোটা উপমহাদেশেরই সংবাদ মাধ্যম ব্রিটিশ মিডিয়ার লেজ ধরে চলে। সেই নোংরা মিডিয়াকে অনুসরন করেই এরা কৃত্ত্রিম উন্মাদনা তৈরি করছে। লোকের উন্মাদনা যত জাগবে (পড়ুন লোকে যত “খাবে”) ততই বিজ্ঞাপন আর ততই বিদেশ ভ্রমন, পত্রিকার বিক্রি। বাকি দায়......নেই। আমার যতদুর মনে পড়ছে এই জিনিষের শুরু ১৯৮৬ থেকে আজকাল পত্রিকার হাত ধরে। আর ১৯৯০ আর ৯৪ সালে কুৎসিত আর পরিকল্পিত ভাবে উন্মাদনা ছড়ানো হয় আমাদের এখানে।

বিদেশি ফুটবল সারা বছর দেখা যায় টিভিতে। তার কতটুকু নিয়ে লোকে এখানে মাতামাতি করে? কিছু উচ্চমধ্যবিত্ত কিশোর তরুন হয় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, বার্সিলোনা নাহলে রিয়েল মাদ্রিদের সাপোর্টার বলে দাবী ও করে নিজেদের। ওই পর্যন্তই। রেশারেশি বা হিংশ্র উন্মাদনা দেখিনি, যা দেখি ব্রাজিল আর্জেন্তিনা নিয়ে। ফুটবল ভালোবাসলে এনারা নিশ্চিত নিজের দেশের খবরটুকু রাখতেন। ভালো খেলোয়াড়দের ভালোবাসলে নিশ্চিত ভাবেই মেসি বা নেইমার দুজনের খেলাই এনাদের ভালো লাগতো। পেলে আর মারাদোনা নিয়ে ঝগড়া না করে তাঁদের পাশে রিভেলিনো , দি স্তেফানো বা পুসকাসের ছবিও লাগাতেন। মারাদোনার সম্পর্কে একটা কথা বলি, গোটা পৃথিবীর কয়েকশো কোটি মারাদোনা ভক্তের মধ্যে আমিও একজন। আর নিজের অন্তর থেকে মারাদোনা খেলাকে শ্রদ্ধা করি। তাই সেই ৮৬ সালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলার পরের দিন সকালে প্রচন্ড অভিমান করেছিলাম মারাদোনার ওপর। হ্যান্ডবল তো সবাই করে। তুমি সেটা গৌরবান্বিত করতে চাইলে কেন মারাদোনা? তুমি তো ওরকম গোল আরো দিতে পারো। বলনা ভুল হয়ে গেছে। তুমি তো রক্ত মাংসের মানুষ। ১৯৯৪ তে মারাদোনার ডোপ টেস্টে ধরা পড়ার পর মনে হয়েছিলো মাটি সরে যাচ্ছে পায়ের নিচে থেকে আমার। আমার কাছে ভগবানের মত এই লোকটা কেন ড্রাগ নেবে? আমাদের মত ভক্তদের চিৎকার কি কানে পৌঁছয়না তোমার মারাদোনা? কেন অন্য উত্তেজনা লাগে? উঠতে বসতে শুনতে হয়েছে তখন, ওইতো তোদের মারাদোনা, ড্রাগ নেয়। আমি আজও মারাদোনার ফুটবলের সেই ভক্তই আছি। সেই যাদুতেই আচ্ছন্ন আছি। শুধু মানুষ মারাদোনার ভক্ত আর নেই।

ব্রাজিল আর্জেন্তিনার রেশারেশিও আমার মাথায় ঢোকেনা। ব্যক্তিগত ভাবে আমি লাতিন আমেরিকান ঘরানার ফুটবলের ভক্ত। ছোটো ছোটো পাস, বুদ্ধিদীপ্ত আক্রমনাত্মক ফুটবল। গতি পরিবর্তন হয়ে চলেছে সব সময়। বল দখলে রাখার অসাধারন মুন্সিয়ানা। আর ভালো লাগে দলগত খেলা। ব্যক্তি নির্ভর হলে আমার ভালো লাগে না। শুধু ব্রাজিল আর্জেন্তিনা নয়, আমার ভালো লাগে চিলি, কলম্বিয়া এমনকি মেক্সিকোর খেলাও। উরুগুয়ে কে কেমন মনে হয় যেন কিছুটা ইয়োরোপ ঘেঁসা খেলা। যেমন স্পেন ও পর্তুগালের খেলায় আবার লাতিন আমেরিকান ঘরানা অনেকটা কাজ করে। আমার তো এই দুই দেশ জিতলেই ভালো লাগে। রেশারেশিটা সত্যিই মাথায় ঢোকেনা আজও। এখানে দেখি, মেসি ভালো মানেই নেইমার খারাপ, সে খেলার অভিনয় করে। মারাদোনা কোকেন নিয়ে ৯৪ সালে বিশ্বকাপ থেকে নির্বাসিত মানেই পেলে ও ড্রাগের ব্যবসা করে। এই ধরনের বিতন্ডা। খেলা নিয়ে ঘরানা নিয়ে, দক্ষতা নিয়ে কখনো কোনো আলোচনা দেখতে পেলাম না। আমাকে ফোন করে একজন জানতে চাইলো গত পরশু আমি ব্রাজিল না আর্জেন্তিনা। কারন আমার ফেসবুকের পোস্ট থেকে নাকি সে ঠিক বুঝতে পারছে না আমি আসলে কি। আমি বললাম আমি মোহনবাগান আর ভারত। ঠিক বুঝতে পারল বলে মনে হলো না।


নেপালের প্রজ্ঞা থাপা ক্লাস টেনের ছাত্রী। স্কুলে খেলাধুলোয় রীতিমত নাম আছে তার। পড়াশোনাতেও প্রজ্ঞা পেছিয়ে নেই সে কোনো ভাবে। চাকরির কারনে তার বাবা থাকেন দেশের বাইরে, বাহরিনে। প্রজ্ঞা দেশের বাড়িতে মা কল্পনা থাপা আর দাদুর সঙ্গে থাকে আর ইটাহারির স্থানীয় মর্নিং স্টার স্কুলে পড়ে। মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার, তেমন অস্বাচ্ছন্দ কিছুই নেই। এই মেয়েটি ২০১৪ সালের ৯ই জুলাই খবরের শিরোনামে চলে এলো। ব্রাজিল হেরে যাবার পর, সকাল বেলা মেয়েটি ঘরের মধ্যে ঢুকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলো। প্রজ্ঞা নিজের ছোট্ট জীবন শেষ করে দিয়ে এমন এক জগতে চলে গেলো, যেখানে সম্ভবতঃ ব্রাজিল আর্জেন্তিনার রেশারেশি নেই। মেসি না নেইমার এই তর্ক নেই। ফুটবলই নেই। কিন্তু বাহরিনে কর্মরত প্রজ্ঞার বাবা আর তার মা, নিজের একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর জন্য নিজেদের কি ভাবে স্বান্তনা দেবেন? দিতে পারবেন কি? এই মৃত্যু, এই চলে যাওয়ার কি মানে থাকতে পারে? কারা দায়ী এর পেছনে? ফুটবল দায়ী? ব্রাজিল দায়ী হেরে যাবার জন্যে? জার্মানি দায়ী হারাবার জন্যে? আর্জেন্তিনা দায়ী রেশারেশির জন্যে? নাকি এই অর্থহীন রেশারেশি যারা তৈরি করলো ব্যবসার স্বার্থে তারা দায়ী? ও জোগো বোনিতো - এই সুন্দর খেলা। একে অসুন্দর করবার কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি কাউকে। যাঁরা জেতা হারা মানেন না। যাঁরা খেলার সৌন্দর্য্য না দেখে অন্য পক্ষের ওপরে অর্থহীন নোংরা আক্রমন করেন তাঁদের অপরাধ বন্ধ হওয়া দরকার। তার জন্যে দরকার, সত্যিকারের ফুটবল যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের এগিয়ে এসে আমাদের এখানে একটা ফুটবল সংস্কৃতি তৈরি করা। বিদেশের মাঠে, দু দলের সমর্থক পাশাপাশি দু দলের জার্সি পরে খেলা দেখতে পারেন যদি, তো এখানে আমাদের এই হিংস্রতার অর্থ কি? আর কোনো প্রজ্ঞা যেন অকালে ঝরে না যায়। আসুন, ফুটবলকে ভালোবাসি। হলুদ সবুজ সাদা নীল এসব যেন ফুটবলকে ভালোবাসার পথে বাধা না হতে পারে। আর প্রানপনে সমর্থন করতেই হয় যদি, সমর্থন করুন নীল জার্সির ভারতকে। আজ যদি ভারতীয় ফুটবল তেমন কিছু করতে না পেরে থাকে, তাহলে আসুন, কিছু করি, যাতে করে এক দিন নীল জার্সি পরে হাতে তেরঙা নিয়ে আমরাও গ্যালারি মাতাতে পারি। 

৩টি মন্তব্য :