[রচনাকাল ৬ই ডিসেম্বর ২০১১ - pnachforon.blogspot.com
এ প্রকাশিত হয়েছে]
মেসো-আমেরিক সভ্যতায় একধরনের দিনপঞ্জি বা
ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হতো, যাকে বলা হয় লঙ কাউন্ট ক্যালেন্ডার। বর্তমান আমাদের
চলতি ক্যালেন্ডারে চেয়ে অনেকটা আলাদা এই ক্যালেন্ডারের একক ছিলো কিন, যা কিনা আমাদের এক দিনের সমান। ২০ কিন এ হতো ১ উইনাল, ১৮ উইনালে ১ তুন ( যা কিনা ৩৬০ দিন, অর্থাৎ প্রায়
আমাদের এক বছরের সমান) এবং ২০ তুন এ ১ কাতুন এবং ২০ কাতুন এ ১ বাকতুন। এই বাকতুন
নিয়েই সমস্যার শুরু।
মায়া সভ্যতার পুরনো নথীপত্র থেকে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে করে, খ্রীস্টপূর্ব ৩১১৪ সালের ১১ই অগাস্ট এই মেসো-আমেরিক ক্যালেন্ডারের শুরু। আর সেই হিসেব বলছে, ২০১২ সালের ২১শে ডিসেম্বর ১৩ বাকতুন সম্পুর্ন হবে। পোপুল ভু নামের এক বইতে পাওয়া যাচ্ছে, ওই দিন চতুর্থ মানব সভ্যতা শেষ হবে, এবং পঞ্চম মানব সভ্যতার সূচনা হবে। প্রত্যেকবার এক একটি মানব সভ্যতা শেষ হয়, আর ক্যালেন্ডার আবার শুন্য থেকে শুরু হয়। পোপুল ভু বইটি প্রাচীন মেসো-আমেরিক সভ্যতার নিদর্শন, খুব সম্ভবত ওলমেক ভাষায় লেখা বই।
মায়া সভ্যতার পুরনো নথীপত্র থেকে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে করে, খ্রীস্টপূর্ব ৩১১৪ সালের ১১ই অগাস্ট এই মেসো-আমেরিক ক্যালেন্ডারের শুরু। আর সেই হিসেব বলছে, ২০১২ সালের ২১শে ডিসেম্বর ১৩ বাকতুন সম্পুর্ন হবে। পোপুল ভু নামের এক বইতে পাওয়া যাচ্ছে, ওই দিন চতুর্থ মানব সভ্যতা শেষ হবে, এবং পঞ্চম মানব সভ্যতার সূচনা হবে। প্রত্যেকবার এক একটি মানব সভ্যতা শেষ হয়, আর ক্যালেন্ডার আবার শুন্য থেকে শুরু হয়। পোপুল ভু বইটি প্রাচীন মেসো-আমেরিক সভ্যতার নিদর্শন, খুব সম্ভবত ওলমেক ভাষায় লেখা বই।
কিছুটা এই বই এবং ক্যালেন্ডারের সূত্র ধরেই ২০১২
সালে মহাপ্রলয় দেখা দেবে, এবং সমগ্র মানবসভ্যতা ধ্বংশ হবে, এরকম একটা প্রচার
অনেক কাল ধরেই চলছে। দেখতে দেখতে ২০১২ দোরগোড়ায় চলে এলো। ২০১১র অক্টোবরের পর থেকেই
বিভিন্ন কাগজপত্রে প্রলয় নিয়ে লেখালিখি বৃদ্ধি পেল। ডিসেম্বরে দেখাগেলো ইন্টারনেটে
পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ পর্নো ছেড়ে
প্রলয় নিয়ে মেতেছে। গুগল বলল, তাদের সার্চ ইঞ্জিনে মানুষ “ডুমস ডে” শব্দ দিয়ে সবচেয়ে বেশিবার সার্চ করা হয়েছে।
ডিসেম্বর যত শেষের দিকে যেতে শুরু করলো, ততই জনমানসে
উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে লাগলো। বড়দিনের উৎসবের মধ্যেই গীর্জায় গীর্জায় প্রার্থনা হতে
লাগলো। জেরুজালেমে পুন্যার্থির ঢল নামলো, ভ্যাটিকানের উঠোনে
এক খানা ছুঁচ পড়ার জায়গা পাওয়া গেলোনা। ওয়েস্টমিনিস্টারে ভিড় কিছুটা কম, কারন ম্যাঞ্চেস্টার সিটি আর মাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের লিগ খেতাব নিয়ে প্রবল
প্রতিদ্বন্দ্বিটা ইংরেজদের মন থেকে আধ্যাত্মিকতাকে একটু হলেও স্থানচ্যুত করেছে।
মস্কো আর সেন্ট-পিটার্সবার্গে মানুষ বরফ উপেক্ষা করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাতে মোমবাতি
নিয়ে প্রেয়ারে অংশ নিচ্ছে। পশ্চিম এশিয়া প্রথমটা তেমন গা না করলেও ডিসেম্বর পড়তেই
মসজিদে মসজিদে ভিড় বাড়তে লাগলো। শেয়ার বাজারের অবস্থা সাঙ্ঘাতিক। সুইৎজারল্যান্ডের
সার্ণ থেকে বিজ্ঞানিরা বললেন, এ যাত্রা রক্ষে নেই, শেয়ারে ধ্বস নেমে গেলো কয়েক মিনিটে। দুপুরের দিকে পোপুল ভু এর নতুন
ব্যাখ্যা হাজির করলেন কোন এক ওলমেক পন্ডিত, শেয়ার বাজার ওমনি
চড়া, কেননা, পৃথিবী ধ্বংশ হচ্ছে না।
ভারতে দু রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা গেলো। শহর
গুলোতে চাপা উত্তেজনা। খবরের কাগজে রাজনীতি চাপা দিয়ে নানা রকম ভবিষ্যতবানী এবং
তার বৈজ্ঞানিক, জ্যোতিষ, ইউনানি এবং ফেং সুই ভিত্তিক ব্যাখ্যা
বেরোতে লাগলো। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বিতর্ক জমে উঠলো, সর্বত্র
একটা কি হয় কি হয় ভাব। তীরুপতি মন্দির কতৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিলেন, তাঁরা আর সোনাদানা গ্রহন করবেন না, কারন রাখার যায়গা
নেই। গত এক মাসে প্রায় দু খানা ফুটবল মাঠ ভরতি হয়ে যায়, এত
সোনাদানা মানুষ দান করেছেন। মাথা মোড়ানোও বন্ধ, কেননা,
মন্দিরের নাপিতরা টানা এক মাস দিন রাত এক করে প্রায় কোটি খানেক মাথা
ন্যাড়া করার পর, ধর্মঘট করেছে। অন্যদিকে গ্রামের নিস্তরঙ্গ
জীবনে ব্যাপারটা অনেকটা উড়ো খবরের মতো ছড়ালো। কিছু একটা হবে, কিন্তু কি হবে, সেটা কেউ বলতে পারলো না। হিংচেপোতার
বটতলার বুড়োরা বললো, পয়রা গুড়ে আর গন্ধ থাকবে না, সব্বনাশ হবে। আটঘরার শাষক পক্ষের নেতা বললেন বিরোধীরা ২০১২ সালের ওই ২১শে
ডিসেম্বর একটা বড়সড় ঝামেলা পাকাবার তাল করছে, সেটা শক্ত হাতে
দমন করা হবে। বিরোধী পক্ষও কিছু একটা বলেছিলো, কিন্তু সে
কন্ঠস্বর এতই দুর্বল, যে কিছুই শোনা গেলোনা। উত্তরে পাহাড়ের
মাথায় মিছিল হলো, কেননা খবর পাওয়া গেছে, ওই দিন নাকি লাখে লাখে বাঙালি পাহাড়ে উঠে, গোর্খাদের
সংখ্যালঘু করে দেবার চক্রান্ত করেছে। তাই টানা একবছরের পাহাড়ে বন্ধ্ করাযায় কিনা,
সেটা ভাবা হতে লাগলো। জঙ্গলমহলে প্রচার চললো, জোরদার
আঘাত হেনে নিশ্চিহ্ন করে দেবার ফন্দি আঁটা হচ্ছে। প্রচার করল সরকার এবং মাওবাদী,
দু-পক্ষই। কেবল আদিবাসীদের কোন হেলদোল দেখা গেল না। এ জিনিস তাদের
গা সহা।
ভারতের তথা বিশ্বের তাবৎ নেতৃবৃন্দও এই খবর থেকে
নিরাশক্ত থাকতে পারলেন না। হোয়াইট হাউসে
ক্লাসিফায়েড মিটিং হতে লাগলো। ইংল্যান্ডের মহারানি ঘন ঘন ডাউনিং স্ট্রীটে
দেখা দিতে লাগলেন। ইজরায়েল “শেষের সেদিন ভয়ংকর” মেনে নিয়ে
প্যালেস্টাইনের আরবদের কিছু অধিকার দিতে রাজি হল, এবং গাজার
চারদিকে যে বিশাল প্রাকারের ওপর তাদের সেনাবাহিনী পাহারা দিতো, সেই প্রাকারের উচ্চতা ৬ ইঞ্চি কমিয়ে দেবার প্রস্তাব করল। গ্রীক আর
তুর্কিরা সাইপ্রাস ছেড়ে চলে যাবার কথা ভাবলো, তবে কেউই
গেলনা। পাকিস্তান বললো, সবই যখন শেষ, তখন
আর কেন? শেষ একটা বছর কাশ্মীরটা নাহয় পাকিস্তানেই থাক। সেই
শুনে “অখন্ড ভারত” এর প্রবক্তারা বললেন,
বরং শেষের একটা বছর পাকিস্তান আর বাংলাদেশ কে জুড়ে নিয়ে অখন্ড ভারত
তৈরি হোক। সি আই আই বললো মুক্ত করো, খুলে দাও সব, মানুষ শেষের আগে মুক্তি পাক। শোনা যাচ্ছে কয়েকটি নারীবাদি সংগঠন এই
বক্তব্য নিয়ে ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছে, এবং আদালতের শরনাপন্ন
হয়েছে।
সতনাম সিং পাঞ্জাবি, তবে পড়াশোনা করেছে
প্রধানত সিমলায় আর তার পরে চেন্নাই আই আই টি তে। পরে বৃত্তি নিয়ে স্ট্যানফোর্ডে
যায়। কিন্তু কোন এক অজানা কারনে কয়েক বছর পর দেশে ফিরে এসে ভারতের ভুতাত্বিক
সর্বেক্ষন বিভাগে চাকরি নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরে আস্তানা গাড়ে। এখানে এসে
পেশাগত কাজের বাইরে, সতনাম আরো বেশী সময় ব্যয় করতে থাকে
নিজের গবেষনার কাজে, এবং ২০০৯ সালে সে তার স্ট্যানফোর্ডের
সহপাঠী ডক্টর এড্রিয়ান হেমস্লে কে নিজের গবেষনার কিছু ফলাফল পাঠায়, ও সাহায্য চায়। ডক্টর হেমসলে একজন জিওলজিস্ট, এবং
মার্কিন সরকারের উপদেষ্টা। গবেষনার ফলাফল দেখে, ডক্টর হেমস্লের
চোখ কপালে ওঠে, এবং তিনি, হোয়াইট
হাউসের মুখ্য উপদেষ্টা কার্ল আনহাউজার কে সঙ্গে সঙ্গে জানান। ওভাল অফিসে জরুরি
মিটিং বসে। সতনাম সিং গবেষনায় আরো এগোবার জন্য মার্কিন সরকারের কিছু তথ্যভাণ্ডার
এবং কিছু ক্লাসিফায়েড সিস্টেম ব্যবহার করবার সুযোগ চান। সি আই এ জানালো, সতনাম ছোকরা “ক্লিন”।
স্ট্যানফোর্ডে কয়েক বার পার্টিতে মাতলামো, র্যাশ ড্রাইভিং
এর জন্য পুলিসের টিকিট খেয়েছে। দেশে থাকতে এস এফ আই নামক ছাত্র সংঠনের সঙ্গে যুক্ত
ছিলো, যা কিনা ভারতের “নন ভায়োলেন্ট”
কমিঊনিস্টদের ছাত্র সংগঠন। তবে সেখানে মিছিল মিটিং এর থেকে, ছাত্রী সংগঠনের এক নেত্রীর সঙ্গেই ছোকরাকে বেশি দেখা যেত। আর ভারতে এখন যা
রাজনৈতিক সমীকরন, তাতে ভারতের “নন
ভায়োলেন্ট” কমিঊনিস্টদের ভয় পাবার কিছু নেই। কার্ল
আনহাউজারের পূর্বপুরুষ জার্মান, এবং প্রথাগতভাবে এনারা পেশায়
শুঁড়ি। অনেকটা হিটলারের বিদেশমন্ত্রি আলফ্রেড রোজেনবার্গের মতো। আনহাউজার বেশি
বিশ্লেষনে গেলেন না। খালি একটাই প্রশ্ন করলেন ডক্টর হেমসলেকে, যে এই ইন্ডিয়ান ছোকরা কাজের কিনা। ডক্টর হেমসলে বললেন, সতনামের ওপরে তিনি চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন। আর সময় নষ্ট না করে, আনহাউজার, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দিয়ে ছোকরার ক্লিয়ারেন্স
নিয়ে নিলেন। সতনাম এখন থেকে নাসা পেন্টাগন এবং কিছু পরিমানে ন্যাটো গোষ্ঠিভুক্ত
দেশগুলোর তথ্যেও নাগাল পাবেন। সতনামের সঙ্গে কাজ করছে কয়েক জন সদ্য কলেজ থেকে
বেরোনো তরুন তরুনি। তাদের যৎসামান্য মাসোহারার ব্যবস্থাও করা হলো। চিপ ইন্ডিয়ান
লেবার। আনহাউজার একটা ছোট্টো একপেশে হাসি হাসলেন। ডক্টর হেমসলে আগামি কয়েক মাসে
বেশ কয়েক বার গুন্টুর যাওয়া আসা করবেন। সতনামের হিসেব অনুযায়ী ২০১২ সালের ২১শে
ডিসেম্বর মহাপ্রলয় দেখা দেবে। নিঊট্রিনো কনিকার সৌরঝড়ের কারনে পৃথিবীর অন্তস্থলের
উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বিপজ্জনক হারে। এই উষ্ণতা বাড়তে বাড়তে একটা সময় পৃথিবীর
পেটের ভেতরের তরল লাভার ওপরে ভাসতে থাকা টেকটোনিক প্লেট (তরল লাভার ওপর ভাসতে থাকা
পাথরের স্তর, যার ওপরে আমাদের আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া আফ্রিকা রা রয়েছে) গুলো স্থানচ্যুত
হবে। দেখাদেবে অগ্নুৎপাত, ভুমিকম্প এবং অতিকায় সুনামি। গোটা বিশ্ব
জলমগ্ন হবে। গড হেল্প আমেরিকা।
পৃথিবীর জনসংখ্যা ৭০০ কোটি। এত মানুষ স্রেফ ভয়
পেয়ে দৌড়োদৌড়ি করলেও যে কোন পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে যেতে পারে। তাই গোপনীয়তা রক্ষা
করতে হবে। রাষ্ট্রপ্রধানরা খুব গোপনে মিলিত হলেন, কয়েক জন প্রতিনিধি পাঠালেন
নিজেরা আসতে না পারার জন্য। পরিকল্পনা অতি বৃহৎ। ৭০০ কোটি মানুষকে বাঁচানো সম্ভব
না। কেবল মাত্র কিছু মানুষকে বাঁচানো যেতে পারে। বাইবেলে আছে, আসন্ন বিপর্জয়ের খবর পেয়ে নোয়া এক অতিকায় জাহজ তৈরি করে সমস্ত প্রানীজগতের
একটি করে মদ্দা ও একটি করে মাদী নমুনা তাতে বোঝাই করেন। তার পরে প্রলয়ংকর বর্ষণ
শুরু হয়। গোটা বিশ্ব জলমগ্ন হয়। কেবল নোয়ার আর্ক বা জাহাজ ভাসতে থাকে। সাত মাস পর,
নোয়া একটি ঘুঘু আর একটি কাক কে উড়িয়ে দেন। ঘুঘু টি ফিরে আসে ঠোঁটে
একটি টাটকা অলিভ পাতা নিয়ে। আরো সাত দিন পর নোয়া ঘুঘুটিকে আবার উড়িয়ে দেন, এবারে আর সে ফিরে আসে না। নোয়ার আর্ক ইতিমধ্যে ভাসতে ভাসতে গিয়ে আটকায়
মাউন্ট আরারাতের চুড়ায়। এই আর্কের পরিকল্পনাটিকেই অনুমোদন করা হলো। কিন্তু একটা নয়,
১০ খানা আর্ক তৈরি হবে। আর তাতে স্থান পাবে প্রানীজগতের সব রকম
নমুনা আর প্রায় লাখ খানেক মানুষ। হ্যাঁ, এই লাখ খানেক মানুষই
রক্ষা পাবে আসন্ন বিপর্যয়ের থেকে। বাকি দের রক্ষা নেই। এই এক লাখ মানুষের আধাআধি
রাষ্ট্রপ্রধানরা পছন্দ করবেন। বাকি আসন খুব গোপনে সেরা ধনি দের মধ্যে বন্টন করা
হবে, চড়া অর্থমূল্যে। কারন এই প্রকল্পের খরচ অনেক। সতনাম এবং
ডক্টর হেমসলে এসবের বিশেষ কিছু জানলেন না। তাঁদের শুধু জানানো হলো, ঠিক সময়ে তাঁরা তাঁদের পরিবার সমেত নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত হবেন।
তাঁদের এই স্থানন্তরের দায়িত্ব বর্তালো ভারত সরকারের ওপর। দক্ষিন তীব্বতের এক
অগম্য পর্বত এর গুহায় অতিকায় আর্ক গুলো তৈরি শুরু হলো এ জায়গা হলো পৃথিবীর মধ্যে
সবচেয়ে উঁচু, আবার চিনে মজুরদের মজুরি খুব কম, আর দক্ষতা? সেটাও প্রশ্নাতীত। গত ৩০ বছরে পৃথিবীর
যাবতীয় উৎপাদনের সিংহভাগ তাদেরই উৎপাদিত। অসংখ্য চিনা মজুর এবং গনমুক্তি ফৌজ কাজ
শুরু করলো, সেই সঙ্গে রইলেন হাতে গোনা কিছু বিজ্ঞানি এবং
ইঞ্জিনিয়ার। ইঞ্জিনিয়ারদের বেশিরভাগ আনা হলো পাশের দেশ ভারত থেকে। কেননা, এরা পয়সা পেলেই খুশি, কি তৈরি হচ্ছে সে নিয়ে কৌতুহল
নেই। আবার ভাষা বোঝেনা বলে, চিনে মজুরদের সঙ্গে বেশি
কথাবার্তাও বলবেনা। নিট ফল, এত বড় জিনিসগুলো যে আসলে কি,
সেটাই একটা ধোঁয়াসা থেকে যাবে। কেননা এই কারিগর এবং পাহারাদারদের
কাউকেই আর্কে স্থান দেবার প্রশ্ন নেই।
লোকসভা এবং তাদের সদস্যরা তালিকায় স্থান পেলেন
ভারত সরকারের। প্রাদেশিক বিধানসভা এবং পরিষদের সদস্যরাও স্থান পেলেন। সামান্য
কয়েকজন অন্য পেশার লোকজনকেও নেওয়ার কথা হয়েছিলো, তবে সে প্রস্তাব পার্লামেন্টে
পাশ হয়নি। টাটা, আম্বানী সমেত ভারতের বড় বড় শিল্পপতিরাও
নিজেদের আসন সংরক্ষন করলেন প্রচুর অর্থমূল্যে। দেশভেদে ব্যবস্থার তারতম্য হলো না।
যাবতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ীরা নিজেদের আসন সংরক্ষন করলেন। লেখক,
শিল্পী গায়ক গায়িকা ইত্যাদিকে নেওয়ার একটা প্রস্তাব উঠেছিলো,
কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধানরা অনুমোদন করেন নি। অনেক কষ্টে এদের হাত থেকে
মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে। আবার এক খানা “উই শ্যাল ওভার কাম”
কিম্বা “ব্লোইন ইন দ্য উইন্ড” লিখে ফেলুক আর কি। বরং যে সব শিল্পীদের টাকা আছে, তারা
এমনিতেই টিকিট কিনে আর্কে উঠতে পারবে। শোনা গেল দাউদ ইব্রাহিম জাতীয় অনেক ধনীই
টিকিট পেয়েছেন উপযুক্ত মূল্যের বিনিময়ে।
ডক্টর হেমসলে গুন্টুরেই আছেন সতনামের সঙ্গে।
সতনামের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৪০০ নব্য প্রযুক্তিবীদ দিনরাত কাজ করে চলেছে। এদের
বেশিরভাগই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। ডক্টর হেমসলের পূর্বপুরুষ আফ্রিকার কালো মানুষ।
এখানে, এই গুন্টুরে অধিকাংশ
মানুষেরই গাত্রবর্ন অনেকটা তাঁরই মতো। আর এখানকার কৃষ্ণনয়না তরুনিদের ভারি ভালো
লাগতে শুরু করেছে, বিশেষ করে দ্যাট হোয়াইট ফ্লাওয়ার, যেটা এরা এদের আজানুলম্বিত বেনীতে জড়িয়ে রাখে। সতনামের দলের একটি মেয়ে,
যার নাম সুধা, তাকে ডক্টর হেমসলের খুব মনে
ধরেছে। মেয়েটি তাঁকে কাঁসার গেলাসে কাপি (যাকে আমেরিকানরা বিকৃত উচ্চারনে কফি বলে)
খেতে শিখিয়েছে, ভাত সাম্ভার আর রসম চাখিয়েছে, রজনীকান্ত বলে এক ইন্ডিয়ান সুপারম্যানের সিনেমাও দেখিয়েছে। এবং ডক্টর
হেমসলে স্বীকার করেন, রজনী ইজ বেটার দ্যান সুপারম্যান। তবে
ডক্টর হেমসলে সুধাকে রাজি করিয়েছেন, সে যেন সপ্তাহে একদিনের
জায়গায় ৩ দিন তার ফুলের মালাটি বদলায়। জেসমিন ফ্লাওয়ার, যত
সুগন্ধীই হোক, পচে গেলে......... ।
২০১২ সালের মাসগুলো খুব তাড়াতাড়ি পেরোতে লাগলো।
জনমানষে আশঙ্কা বাড়ছে দেখে ভারত সমেত বেশ কিছু দেশে ইন্টারনেটের সোস্যাল
নেটওয়ার্কিং সাইট এবং ব্লগের ওপর নিষেধাজ্ঞা বসলো। যদিও টেলিভিশন এবং খবরের কাগজে
অবিশ্রান্ত নানা ধরনের জল্পনা কল্পনা চলতেই থাকলো। শেষে এদের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা
বসলো। জম্মুর কাছে ভারত আর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কয়েক দিন কিছু গোলাগুলি
ছোঁড়াছুঁড়ি করলো, এবং এই যুদ্ধ নিয়ে মেডিয়া মেতে উঠলে, দু দেশের দুই
সরকার একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। কয়েক দিন পরেই তাঁরা ৬ নম্বর আর্কে একে অপরের
প্রতিবেশী হবেন। গোটা পৃথিবী থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রানী এবং উদ্ভিদের নমুনা সংগ্রহ
করার কাজ চলছে দ্রুতগতি তে। এমনিতে অসুবিধে হবার কথা নয়, তবে
পরিবেশবীদ দের এড়িয়ে কাজ করতে হচ্ছে বলে একটু রেখে ঢেকে চলা হচ্ছে। অবাঞ্ছিত
ঝামেলা আর কে চায়?
ডিসেম্বর মাস। সতনামের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্টিং
সিস্টেমে এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে টেকটোনিক প্লেটের ভঙ্গুর দশা। বড় বড় কম্পিউটার
পর্দা জুড়ে ছবি এবং তথ্য। পৃথিবীর অভ্যন্তরে উথাল পাথাল হচ্ছে। সতনাম একখানা ঘড়ি
তে কাউন্ট ডাউন চালিয়ে রেখেছে। ডক্টর হেমসলে স্থির থাকতে পারছেন না। সতনাম মাঝে
মাঝে ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা চালায় তাঁর সঙ্গে। আলোচনা করে, কি ভাবে টেকটোনিক প্লেটের
ভাঙ্গন দেখা দেবে। কোথায় কি ভাবে সুনামী শুরু হবে, এবং কি
ভাবে সেই ঢেউ এসে আঘাত করবে স্থলভাগে। ডক্টর হেমসলে কিছুতেই স্থির থাকতে পারছেন
না। এক দিকে কম্পিউটারের পর্দায় দেখছেন, যে কি ভাবে তাঁর বলা
প্রত্যেকটি সম্ভাবনা মিলে যাচ্ছে একে একে। জিওলজিস্ট হিসাবে গর্ব হচ্ছে তাঁর,
কিন্তু যখনই চার ধারে দেখছেন, এই গাছপালা,
মানুষ, রাস্তায় চরতে থাকা গরু, তাঁর মেড বুড়ি, যার বিদ্ঘুটে নামটা কিছুতেই মনে করতে
পারেন না, পার্ক, বাচ্ছারা, রজনীকান্ত আর সুধা, কিছুই থাকবেনা, দারুন একটা মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন। কাউকে বলতে পারছেন না। সতনাম
কে দেখছেন, আর ভাবছেন, কি ভাবে এই
ইন্ডিয়ান গুলো এতো শান্ত থাকতে পারে? জিজ্ঞেস করেও দেখেছেন।
ভেবেছিলেন সতনাম কোন হিন্দু দর্শণের কথা শোনাবে, কিন্তু
সতনাম উলটে তাঁকে হেগেল এর স্ব-বিরোধ এবং বিলোপ (কন্ট্রাডিকশন্ এন্ড নেগেশন্) এর
ব্যাখ্যা দিয়েছে। কাউন্ট ডাউন ক্লক চলছে। ১৩ বাকতুন শেষ হয়ে আসছে। শেষ হয়ে আসছে
চতুর্থ মানব সভ্যতা।
১৮ই ডিসেম্বর। মাঝরাত্রে ধাক্কা দিয়ে ঘুম ভাঙালো
সতনাম। হিসেবে একটু ভুল ধরা পড়েছে। ৩ দিন নয়, হাতে মাত্র ৩৬ ঘন্টা সময়। রাষ্ট্রপ্রধান এবং বাকি
আর্কের টিকিটধারীরা যদিও বেশিরভাগই তীব্বতের অজানা সেই গিরিগুহায় ঢুকে পড়েছেন,
কয়েকজন তখনো বাকি ছিলেন। তাঁদের সবাইকে রওনা হয়ে যেতে বলা হলো। ১৯
তারিখ সকাল থেকেই সতনাম আর তার দলের তরুন তরুনি রা খুব ব্যস্ত হয়ে শেষ মুহুর্তের
কাজ করছে। কি শান্ত সকলে। যদিও এরা সবাই জানে কি ঘটতে চলেছে। রাত্রে একটা মিলিটারি
হেলিকপ্টার আসবে, সতনাম, তার স্ত্রি,
পুত্র এবং ডক্টর হেমসলেকে নিয়ে তীব্বত উড়ে যাবে। বিকেল বেলা পাশের
একটা মসজিদে নামাজের আজান শুনে খুব মন খারাপ লাগছিলো এই পুরোনো নোংরা পচে যাওয়া
মৃত্যু পথযাত্রি পৃথিবীটার জন্যে, তাই একটু হাঁটতে
বেরিয়েছিলেন ডক্টর হেমসলে শেষ বারের মত। দেখলেন সন্ধ্যের মুখে মন্দির গুলোতে
প্রদীপ জ্বলে উঠছে, আরতী শুরু হয়েছে। জনমানসে উত্তেজনা যদিও
যথেষ্ট পরিমানেই আছে ২১শে ডিসেম্বর নিয়ে, কিন্তু মিডিয়া
নিয়ন্ত্রনের কারনে সেই উত্তেজনা, উন্মাদনায় পরিবর্তিত হয়নি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের প্রধানমন্ত্রি টেলিভিশন, রেডিও এবং
সংবাদপত্রে বার বার বিবৃতি দিয়েছেন, কিছু ঘটবেনা, সবাই শান্ত থাকুন। নিশ্চিন্ত থাকুন। বিদেশী প্ররোচনায় পা দেবেন না।
রাত ১১টা ২৫ মিনিট। হেলিকপ্টার নেমেছে সামনের
মাঠে। সতনাম অন্য একটা কপ্টারে পরে আসবে। ডক্টর হেমসলে সঙ্গে কিছু নথিপত্র নিয়ে
এটায় যাবেন। হেলিকপ্টারের কান ফাটানো আওয়াজে এত রাত্রেও লোকে ছুটে আসছে। ডক্টর
হেমসলে হেলিকপ্টারে ওঠার সিঁড়িতে পা রাখলেন, পেছনে তাকালেন শেষবারের মত। সবার আগে ও কে ছুটে আসছে?
কার চুলের টাটকা সাদা যুঁই ফুলের সুবাস তাঁকে টানছে?
২০শে ডিসেম্বর। আর্ক - ৩ এর ভেতরেই কন্ট্রোল রুম।
আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি। বিশাল কম্পিউটারের পর্দায় দেখা যাচ্ছে মহাসুনামীর ঢেউ
এগিয়ে আসছে। গোটা ভারতীয় উপমহাদ্বীপ ডুবে গেছে। টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। অবশ্য ফোন
ধরার মত কেউ নেই আর। কার্ল আনহাউজার রুমালে মুখ মুছলেন। অনেক পরিশ্রমের ফসল এই
আর্ক। ঢেউ এগিয়ে এলে আর্ক গুলো আপনা থেকেই জলের ওপরে ভেসে উঠবে এমন ব্যবস্থা করা
আছে। আগামী এক বছর তাঁরা স্বচ্ছন্দে ভাসতে পারবেন মহাসমুদ্রে। তার পর খুঁজতে হবে
কোথাও কোনো ডাঙা জমি বেরিয়েছে কিনা। ৭০০ কোটির মধ্যে ১ লাখ মানুষ কে বাঁচানো গেলো। তিনিই নোয়া। এ যুগের নোয়া।
ভবিষ্যত প্রজন্ম তাঁকে অমর করে রাখবে। আর মাত্র এক মিনিট। ডক্টর হেমসলে এসে পৌঁছতে
পারেন নি। মাঝরাত্রের কিছু পরে শেষ মেসেজ পেয়েছেন ডক্টর হেমসলের, যে তিনি পারলেন না
পৌঁছতে। সতনাম সিং ও পারেনি। যাক গে ভেবে লাভ নেই আর। এসে গেছে মহা-সুনামী। দুলে
উঠলো অতিকায় আর্ক। প্রবল ঠান্ডা হয়ে যেতে শুরু করলো সব কিছু। হিমালয়ের বরফ.......।
জ্ঞান হারালেন সকলে।
হাত চেপে ধরেছিলো সুধা। পেছনে সতনামের দলের ছেলে
মেয়েরা। এদের ফেলে কি করে যাবেন তিনি? তাজা মুখ গুলোর দিকে তাকিয়ে হঠাৎ কেঁদে ফেললেন ডক্টর
হেমসলে। সুধা এগিয়ে এসে হাত ধরলো তাঁর। পেছনে ও কে? সতনাম না?
ওর তো এগিয়ে যাবার কথা। ও নিজেও .........?
ভোর হতে বেশী বাকি নেই। ডক্টর হেমসলে বাক্শক্তি
হারিয়েছেন। সত্যকে স্বীকার করার শক্তি হারিয়েছেন।
ভোর হতে বেশী বাকি নেই। পূব আকাশে লালচে আভা।
আর্কের ধাতব পাত গুলো ঝকঝক করছে। সুনামীর ঢেউ এসে আঘাত করলে এই কুয়োর মতো মহাকায়
গুহা জলে ভরে উঠবে, এবং আর্ক জাহাজ গুলো জলে ভেসে উঠবে। কর্মী বাহিনী অনেক দিনই কাজ সেরে চলে
গেছে এখান থেকে। গত কিছু সপ্তাহ গোটা বিশ্ব শাষিত হয়েছে এখান থেকেই। আর কেউ নেই
আসে পাশে বেশ কয়েকশো কিলোমিটারের মধ্যে। কাউন্ট ডাউন ঘড়ি চলছে, আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড। হঠাৎ আর্ক গুলোর ছাতের দিকে, যেখানে এয়ার কন্ডিশনিং এর হাওয়া চলাচল করে, সেখান
থেকে এক ঝলক অস্বাভাবিক ঠান্ডা হাওয়া ভেসে এলো। তার পরে হুড় হুড় করে ঢুকতে শুরু
করলো তরল নাইট্রোজেন। কয়েক মাইক্রো সেকেণ্ডে সবাই জমে গেলো। গোটা জাহাজ গুলো পরিনত
হলো দৈত্যাকৃতি ক্রায়োপ্রিজারভেশনে। এই প্রযুক্তি মানুষের জানা। তরল নাইট্রোজেনের
মধ্যে -১৯৬ ডিগ্রি শীতলতায় কোষের মৃত্যু হয়না। আবার কোষ সক্রিয়ও থাকেনা। অনেকটা
কোমার মত অবস্থা প্রাপ্ত হয়। এই মানুষ গুলো জীবিত ও না, মৃত
ও না। এই অবস্থায় অনন্তকাল তাদের রেখে দেওয়া যেতে পারে, হিমালয়ের
এই অগম্য জায়গায়। মাটির সঙ্গে সম্পর্কহীন এই মানুষগুলো পর্দায় দেখেছে, প্রলয় এগিয়ে এসেছে। সতনাম আর তার ছেলে মেয়েরা প্রানপন খেটে গেছে
বিশ্বাসযোগ্য সিমুলেশন তৈরি করতে। কিছু তথ্য এসেছে হ্যাকিং করে। বাকিটা শাষকরা
নিজেরাই তুলে দিয়েছে সতনামের হাতে। স্যাটেলাইট, মেইনফ্রেম
কম্পিঊটার, সামরিক তথ্য সব কিছু মিলিয়ে তৈরিকরা হয়েছে দানবীয়
ভাঁওতা। তথ্য ব্যবহারের অছিলায় হ্যাক করা হয়েছে পৃথিবীর সমস্ত বড় বড় কম্পিঊটার
সিস্টেম। ঢোকানো হয়েছে ভাইরাস। আর সব কিছুই করা হয়েছে তাদেরই টাকায়। অকল্পনীয়
অর্থভান্ডার উজাড় করে দেওয়া হয়েছে সতনামের হাতে। সেই টাকা দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে ধরা
পড়ার আশংকাকে উৎকোচ দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। ভারতীয় ইঞ্জিনিয়রদের মধ্যে সতনামের আই আই
টির সহপাঠিরা ছিলো। তরল নাইট্রোজেনের কেরামতীটা তাদেরি।
ভোর হতে বেশী বাকি নেই। ডক্টর হেমসলে বাক্শক্তি
হারিয়েছেন। সত্যকে স্বীকার করার শক্তি হারিয়েছেন। শুধু প্রশ্ন, কেন? কি হলো এই সব করে? সুধা কফি নিয়ে এসেছে। জানলা দিয়ে
ভোরের রোদ এসে ঢুকছে। সতনাম বলে চলেছে।
“আজ ভোরের বাতাসে, পৃথিবীর শাষক
নেতারা, ধনি শোষকরা শেষ বারের মত নিশ্বাস নিয়েছে এড্রিয়ান।
আগামী কাল, ২১শে ডিসেম্বর, ২০১২ সালের
ভোর, আর এদের নিশ্বাসে বাতাস কলুষিত হবে না। চতুর্থ মানব
সভ্যতা শেষ। আগামী কাল শুরু হবে পঞ্চম মানব সভ্যতা, শুন্য
বাকতুন। মুক্ত মানুষের মুক্ত পৃথিবী”
[*এই গল্পের কিছু চরিত্র ২০১২ সিনেমাটি থেকে নেওয়া]
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন