সোমবার, ২২ জুন, ২০১৫

তেরো

রাত এখন কোপার কোপে। যাঁরা জানেন, তাঁরা তো জানেনই। আর যাঁরা আমার মত, বুঝতে না পারলে মুচকি মুচকি হাসেন, আর ভান করেন যেন সব বুঝেছেন, তাঁদের বলি, কোপা হলো কোপা আমেরিকা। আমেরিকা কাপ। ফুটবলের আসর। লাতিন ফুটবলের ধুন্ধুমার লড়াই। গেল হপ্তায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বার্সিলোনা – জুভেন্তাস ঘটে গেছে। শেষ রাতে সেই নিয়ে ফোনে মেসেজ চালাচালি করতে গিয়ে দেখলুম, অনেক বড় বড় ফুটবলপ্রেমীই কেমন যেন আড়ো আড়ো ছাড়োছাড়ো করছেন। সকালে বাসে অফিস যাবার সময় নিত্যযাত্রিদের জোরদার আলোচনায় দেখলুম বার্সিলোনা, কোপা, এমন কি হিউমের আতলেতিকো কলকাতায় যোগদানের আলোচনাও কেমন যেন ঝিমিয়ে। শেষে বলেই ফেললুম, হলোটা কি? কোপা তে মেসি-নেইমার-সাঞ্চেজ-সুয়ারেজ, আর সবাই এত ঠান্ডা? হই হই করে উত্তর এলো – বেলো টা চলে গেল যে, বল্লুও নাকি যাবে যাবে করছে...। অন্য দিক তাক করেই ছিলো, এবার দাগল – তোদের সঞ্জয় সেন তো আছে রে ভাই, ওটাই আসল, কাতু-সোনি উপরি। ব্যাস। বুঝলুম ফুটবল আছে ফুটবলেই। শুধু টিভির পাশে, পাশের মাঠের ছোঁয়ার আরো রঙিন হবার চেষ্টা চলছে মাত্র।

শুক্রবার, ১৫ মে, ২০১৫

ফোকর এবং ফুড়ুত ২

মাঝরাতে দেখি ফোকরটা খ্যাঁক খ্যাঁক করে খ্যাঁকশেয়ালের মত হাসছে। একেই গরমের চোটে পিত্তি চটকে চৌঁতিরিশ হয়ে আছে, ঘুমের দফারফা, তার ওপরে বিটকেল গা জ্বালানে হাসি। এখনো ফোকরটা যে টিঁকে আছে, সেটাই আশ্চয্যি। সেই ছোটোবেলায় আমাদের খেলার মাঠ, আর তার ধারে ইঁটের পাঁচিল, আর পাঁচিলের গায়ে কাঠচাঁপা গাছের পেছনের সেই ফোকরটা। আমি খেলতে নেমে কিছু ছড়িয়ে ফেললেই খ্যাঁক খ্যাঁক করে গা-জ্বালানি হাসতো আর টিটকিরি দিতো। ধ্যাত্তেরিকা। উঠেই পড়লুম। ঘাড়ে মাথায় জল থাবড়ে, গলাতেও দু ঢোক ঢেলে ঘুমুতে এসে দেখি আবার হাসছে। কি যন্তন্না মাইরি।

শনিবার, ৯ মে, ২০১৫

শেষ হয়েও ... (উদ্ভুট্টে সিরিজ)

[http://pnachforon.blogspot.in/ এ ৯ই মে ২০১৫ তে প্রকাশিত] 
টেবিলের কোনায় পড়ন্ত বিকেলের একটুকরো রোদ এসে পড়েছে। দক্ষিন পূর্ব বাভারিয়ায় গ্রীষ্মের তুলনা হয়ত পৃথিবীর কোথাও নেই। ঝিরিঝিরে হাওয়া, নরম সোনালি রোদ। গাছের পাতা গুলো মনে হচ্ছে হালকা সবুজ মাখনের তৈরি, যেন আর একটু রোদ পেলেই গলতে শুরু করবে। এ অঞ্চলের লোকজন ভারি হাসিমুখ। একটু গাঁইয়া বটে, কিন্তু হাঁদা হবার সুবিধে আছে। যাই বোঝানো হোক, ঝটপট বুঝে যায়। বিংশ শতকের শুরু থেকেই জীবনের লয় দ্রুত হতে শুরু করেছে। এই ১৯৩৭ সালের কেজো পৃথিবীর সঙ্গে গত শতকের অভিজাত ধীরলয়ের জীবনের অনেক পার্থক্য। সে জীবনে গতি ছিলোনা বটে, কিন্তু আভিজাত্য ছিলো, চিন্তার খোরাক ছিলো, মাথা খাটাবার জায়গা ছিলো, সুক্ষতা ছিলো, শিল্পের ছোঁয়া ছিলো সব কিছুর মধ্যেই, এমনকি অপরাধ ও অনেক......।

মঙ্গলবার, ৫ মে, ২০১৫

হাপুস হুপুস

       [http://pnachforon.blogspot.in/ এ ৭ই মে ২০১৫ তে প্রকাশিত]      
   - খামোখা ঝগড়া করলেএত রাগ করতে আছে?
- আমি তো ঝগড়া করিনি, বরং একটা ভালো কথা বোঝাতে চেয়েছিলাম।
- ভারি তো বোঝানো হলো, মাঝখান থেকে রাগারাগি করে খাওয়া ছেড়ে উঠে গেলে
- আমাকে এরকম করতে দেখেছো কখনো?
- তুমি এখন আর সেই ছোটোটি নেই, বড় হচ্ছো, গত মাসে ৯ পুরো করে ১০ এ পা দিয়েছ
- তাতে কি?
- বড় হলে বুঝদার হতে হয়
- তা তুমি বুঝি খুব বুঝদার?

বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫

দুনিয়া কাঁপানো ১ দিন

[http://pnachforon.blogspot.in/ এ ২২শে এপ্রিল ২০১৫ তে প্রকাশিত]  
(পাঠকের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, লেখাটি পুরো পড়বেন। নয়ত পড়বেন না)

৩০শে এপ্রিল ১৮৮৬, শুক্রবার
----------------------
আনন্দ –
ü  ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের দাবিতে ৪ঠা মে শিকাগোতে বড় জমায়েতের ডাক দিলো মজদুর ইউনিয়ন।
ü  হুমকি ধর্মঘটের, নৈরাজ্যবাদী হামলার আশংকা মার্কিন সরকারের
ü  দাবী অন্যায্য, ধর্মঘট ক্ষতি করছে মার্কিন কর্মসংস্কৃতির – দাবী শিল্পপতি মহলের

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৫

গোগ্রাস

[http://pnachforon.blogspot.in/ এ ১৪ই এপ্রিল ২০১৫ তে প্রকাশিত]

পুঁচকে বলে পুঁচকে? একদম এইটুকুনটি। কোলের ছেলে অস্কার। তা বাপ-মায়ের আর দোষ কি? ছেলের চাঁদপানা মুখটি দেখে বাবা বলে বসলেন ছেলে আমার বড় হয়ে অমুক হবে। ব্যাস। ক্ষুদে ছেলে গোঁসা করে ঠিক করল আর বড় হবে না। একটু গোঁয়ার হয় বটে জার্মানরা। তাও আবার যেমন তেমন শহরের জার্মান নাকি? এ হলো ডানৎসিগ (Danzig)। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির থেকে ছেঁটে নিয়ে যে শহরকে স্বাধীন বলে ঘোষনা করেছিল মিত্রপক্ষ সেই ডানৎসিগ। অস্কার আর বড় হয়নি। ওই তিন বছরেই আটকেছিলো। তিন বছরের জন্মদিনে বাবার দেওয়া একখানা টিনের ড্রাম পিটে পিটে তার যত ডানপিটেমো। টিন-ড্রাম উপন্যাসটি লিখেছেন গুন্টার গ্রাস। ছবিও হয়েছে এই উপন্যাস নিয়ে। অস্কারের মত গুন্টার গ্রাসের জন্মও ওই ডানৎসিগ শহরে।

সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৫

ফুলমতি

[http://pnachforon.blogspot.in/ এ ৯ই এপ্রিল ২০১৫ তে প্রকাশিত]

আমার ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের সংখ্যা খুব একটা বেশী নয়। কিন্তু যে কটি আছে, তাদের প্রত্যেকটার একটা করে নাম আছে আলাদা আলাদা। কয়েকখানা নাম লোকজন জানে বটে, কিন্তু বেশীরভাগের নামই আমি বাদে দ্বিতীয় ব্যক্তির অজানা। এই যেমন ধরুন গিয়ে নিকুঞ্জবিহারি, সে হলো আমার ক্যামেরা। নিকষ কালো ক্যামেরার শরীরে লেখা রয়েছে নিকন। সেই দেখেই নাম দিয়েছি নিকুঞ্জবিহারি।

মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০১৫

স্মৃতির সরণি বেয়ে মহাপ্রস্থানের পথে

[http://pnachforon.blogspot.in/ এ ২রা এপ্রিল ২০১৫ তে প্রকাশিত]

আমি লোকটা ঠিক প্রগতিশীল গোছের নই। বরং বেশ কিছুটা রক্ষনশীল আর গোঁড়া বলতে পারেন। পরিচিতজন জানেন, তাই আমি দু একখানা বামপন্থী বুকনি ছাড়লেই তাঁরা মুচকি হাসেন আমি বাঙালি-গুজরাতি তে তফাত মানি। চিনেদের দেখলে তাদের নাক আমার চেয়ে কতটা চ্যাপ্টা আর সাহারার দক্ষিনের আফ্রিকান দেখলে আমি তার চেয়ে কতটা ফর্সা, মনে মনে সেই হিসেব কষি আমি তীর্থস্থানে যাই, দুর্গা পূজো , সরস্বতী পূজোয় অঞ্জলী দিই মাঝে মধ্যে। ভোগ খেতে তো কোন কালেই ছাড়িনা, যে কোনো দেবতার, তা সে যত দুর্ভোগই হোক।

সোমবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

আলবার্ট স্পীয়ারের বিশ্বভ্রমন

রামনাথ বিশ্বাস, স্বেন হেদিন, ইবন বতুতা, মার্কো পোলো কিম্বা মন্দার বোস। ভূপর্যটক অনেক রকমের হয়। পায়ে হেঁটে, সাইকেলে, জাহাজে চড়ে, এমন কি হালে-কালে দুচার পিস কর্পোরেট কত্তাকে দেখেছি, যাঁরা এরোপ্লেনের বিজনেস ক্লাসে চড়ে দুনিয়া ঘুরে চলেছেন। দুনিয়ার চতুর্দিকে চক্কর মারতে মারতে বোধহয় দুনিয়ার সব কিছুই তাঁদের কাছে প্যাঁচালো লাগে । দেশে দেশে অমিল আছে, আবার মিলও কম নয়। এই যেমন ধরুন গোটা ভারতবর্ষের রেল স্টেশনগুলোর মধ্যে কেমন একটা মিল আছে মেজাজের আর চরিত্রের।  পৃথিবীর সব বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে মিল যেন আরো বেশি। সবই কেমন এক রকম। এমন কি গন্ধ পর্যন্ত।

বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

ফোকর এবং ফুড়ুৎ - ১

অমন একটা ফাঁকা ফাঁকা গাঁ-গেরামে কেন যে মাঠের চাদ্দিকে অমন উঁচু পাঁচিল দেওয়া হয়েছিলো কে জানে বাপু। মাঠে ঢোকা বেরোনোয় অবিশ্যি কোনো বাধা বিপত্তি ছিলোনা। সেটা ছিলো সম্মিলনী ক্রিড়া চক্রের অঘোষিত মাঠ। আর আমরা ছিলাম সেই কেলাবের মেম্বার আর কর্মকর্তা। আমাদের ফুটবল টিমটা ছিলো বেড়ে। নরম নরম, ভিজে ভিজে দক্ষিন বঙ্গের সবুজ সবুজ মাঠ তো নয়, এ হলো রাঢ়ের পশ্চিম প্রান্তের পাথুরে লাল মাটি। কাঁকরে ভর্তি। স্লাইডিং ট্যাকেল করলে ছাল চামড়া উঠে আসতো। সবাই ভয় পেত অমন খেলতে, শুধু ভয় পায়নি পাডু।

রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৪

ঘটি

[http://pnachforon.blogspot.in/ এ ১২ই অক্টোবর ২০১৪ তে প্রকাশিত]

এই কয়েক দিন আগের কথা। সাগরপারে থাকা এক বন্ধু বিজয়া করতে ফোন করেছিলো। কথায় কথায় পুরোনো স্মৃতি ফিরে ফিরে এলো। চল্লিশে পা রাখলে এসব স্মৃতিচারন বেড়ে যায় একটু। ডেকার্স লেনের চিত্তর হোটেল থেকে সাবিরের রেজালা, ব্রাজিল, মোহনবাগান, সিপিএম, পুরোনো বান্ধবীরা, ভাঙ্গা প্রেম, পূজাসংখ্যার পড়তে থাকা মান, ছানাপোনার কির্তি-কলাপ এসব পেরিয়ে কথার তোড় যখন একটু কমেছে, তখন বর্তমানে ফিরলাম। কি করছি, কি করছিনা এই সব। বন্ধু আমাদের পাঁচফোড়নের নিয়মিত পাঠক। তবে লেখালিখি তার ধাতে নেই। বেজায় কুঁড়ে। জানি এ লেখাও সে পড়বে, পড়ে তার “কুঁড়ে” খেতাবের জন্যে আমাকে মনে মনে একটু খিস্তিও দেবে, কিন্তু ওই যে, কুঁড়ের বেহদ্দ, তাই এসব নিয়ে কিস্যু লিখবে না।

শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

হোক কলরব

ফোর্ট কালিঘাটে, মাটির ৩০ ফুট নিচে খুবই সুরক্ষিত এক বাঙ্কারে, নিজের ঘরে বসে তিনি খবর নিচ্ছিলেন। পাশের ঘরে কয়েকজন খ্যাতনামা প্রযুক্তিবীদ ও ভূবিদ্যাবিশারদ এক খানা অত্যাধুনিক সিজমোগ্রাফ নিয়ে বসে আছেন। সিজমোগ্রাফ, যা ভুমিকম্প মাপে। স্বভাব বশতঃ অধীর হয়ে তিনি উঠে আসছিলেন বার বার। জিজ্ঞেস করছিলেন
ধরা গেছে? কম্পন ধরা গেছে?
প্রযুক্তিবীদরা ওঘর থেকে হাওয়াই চটির ফট্‌ফট্‌ শুনলেই আরো বেশি করে মন দিচ্ছিলেন কাজে। মুন্ডু যতক্ষন আছে, মুন্ডুর ভয় ও আছে। সর্বহারা-হাভাতে হলে হয়ত ভয় ও থাকতো না।

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৪

কাঁঠালবীজ ভাতে

সব সময় পোলাও কালিয়া মুখে রোচেনা। পেটে তো নয়ই। টানা কদিন ভারি ভারি রান্না খাবার পর দুটি সাদা ধপধপে ভাত, একটু ডাল, সঙ্গে লেবু কাঁচালঙ্কা, দুটো পটল ভাজা, একটু কোনো চচ্চড়ি আর মাছ। আহা, যেন অমৃত। সোজাসাপ্টা রান্নাকে পাত্তা দিতে চাইনা আমরা। অনেক বাঙালিকে চিনি, যাঁরা জটিলতম মোগলাই বা চিনে রান্না নিখুঁত ভাবে করে দেবেন, কিন্তু সামান্য মুলো-বেগুন-বরবটি তে কাঁচালঙ্কা-সর্ষেবাটা আর পাঁচফোড়ন দিয়ে অসামান্য চচ্চড়ির নাগাল এখনো পান নি। কত সামান্য বস্তু দিয়ে অসামান্য রান্না সম্ভব, তার প্রকৃষ্ঠ উদাহরন বাঙালি রান্নাঘর।

বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০১৪

প্রজ্ঞা থাপার ছোট্ট জীবন

প্রজ্ঞা থাপা ক্লাস টেনের ছাত্রী। স্কুলে খেলাধুলোয় রীতিমত নাম আছে তার। পড়াশোনাতেও প্রজ্ঞা পেছিয়ে নেই সে কোনো ভাবে। বাবা থাকেন দেশের বাইরে, বাহরিনে। প্রজ্ঞা দেশের বাড়িতে মা কল্পনা থাপা আর দাদুর সঙ্গে থাকে আর ইটাহারির স্থানীয় মর্নিং স্টার স্কুলে পড়ে। মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার, তেমন অস্বাচ্ছন্দ কিছুই নেই। এই মেয়েটি ২০১৪ সালের ৯ই জুলাই খবরের শিরোনামে চলে এলো।

মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০১৪

ওস্তাদের মার শেষ রাতে

তাহার পর কি হইলো তাহা বিশ্ববাসী দেখিয়াছেন। দেখিয়াছেন গগনভেদী অট্টরোল। দেখিয়াছেন লুটিয়ে পড়া খেলোয়াড় ও বাকিদের হা-হুতাশ। পরের দিন দেখিয়াছেন উল্লাস ও স্বপ্নভঙ্গ। স্মৃতিরোমন্থন ও খিস্তি খেউড়। কিন্তু কি ঘটিয়াছিলো সেখানে?

শনিবার, ১৪ জুন, ২০১৪

সেলিন্‌থিপের দেশে

(১)
ব্যাঙ্কক শহরটা বিশাল বড়। কিন্তু ঠিক কলকাতার মতো না। কলকাতার মানচিত্র, আমার করা ডিমের পোচের মত দেখতে ছেতরে যাওয়া, একদিকটা লম্বাটে, কিছুটা যেন ছিঁড়ে আসছে, কুসুমটা গলে গড়িয়ে গেছেকিন্তু ব্যাঙ্কক অনেকটা ওস্তাদের হাতে তৈরি ডিমের পোচ (আসলে এটাই ফ্রায়েড এগ। আমাদের ডিম ভাজা হলো অমলেট, আর পোচড্‌ এগটা তৈরি হয় ফুটন্ত জলে ডিম ভেঙে ছেড়ে দিয়ে)। প্রায় গোলাকার, আর মাঝামাঝি হলো তার ধর্মতলা বা ডাউনটাউনবেশিরভাগ শহরেই ধর্মতলা থাকে শহরের কেন্দ্রে, বাত্যয় নিউ-ইয়র্ক। ওঁয়াদের ইয়েটা হলো শহরের এক প্রান্তে, সমুদ্দুরের ধারে

মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০১৪

মুর্গ ভর্তা

পাবলো পিকাসো কে তাঁর আঁকার গুরুদেব নাকি টানা ছ-মাস কেবল পায়রার পা আঁকিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে পাবলোর গুরুদেব খুব সম্ভবতঃ তাঁর পিতৃদেব, কাজেই বেচারাকে মুখ ব্যাজার করে পায়রার পা আঁকতেই হয়েছিলো ছ মাস। তবে কিনা, এর পরে, পাবলো পিকাসো কে নিখুঁতের মাপকাঠি নিয়ে কখনো ভাবতে হয়নি। ওই ছটা মাসেই, নিখুঁত মানে যে কেমন নিখুঁত , সেটা তাঁর বোঝা হয়ে গিয়েছিলো।

নিখুঁত স্বাদ, মানে যেটা যেমন, সেটা তেমন কি করে আনা যায়? বাঙালি রান্না করতে গেলে মা-ঠাকুমারা দু এক খানা অমুল্য টিপ্‌স দেন, তাতেই কেল্লা ফতে হয়ে যায়। এই যেমন ধরুন, লুচি ভাজার সময় খুন্তিটা লুচির পিঠে একবার বুলিয়ে দেওয়া। কিন্তু মুশকিলটা হয় যখন অবাঙালি রান্না হয়। ইতালি চিন ছেড়েই দিন, ভারতেরই অন্য প্রদেশের রান্না, বাঙালি হেঁসেলে ঢুকে একটু বাঙালি হয়েই যায়। আমার সঙ্গে অনেকেই হয়ত একমত হবেন না। আসুন একটা উদাহরন দি।

শুক্রবার, ২৩ মে, ২০১৪

মীন মইলি

মীন কথাটা সংস্কৃত। আমরা বাংলায় খুব একটা ব্যবহার করি না। কেবল মনে পড়ছে “পদ্মা নদীর মাঝি” উপন্যাসে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন পদ্মা তার মীন সন্তান দের নিজের গর্ভে লুকিয়ে রাখে। কথাটা ইলিস নিয়ে বলা। তবে কিনা মীন মানে হলো মাছ। সব মাছই মীন। তবে এইবারে যে রান্নার কথা বলছি, সেটা বাংলার রান্না নয়।  মালয়ালি রান্না, আর খুবই সাধারন পদ। মীন মানে মাছ, আর মইলি হলো গিয়ে ঝোল। অর্থাৎ মাছের ঝোল।

মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০১৪

সহজে বিরিয়ানি



বিরিয়ানি নিয়ে যত লেখা হয়েছে, তত বোধহয় আর কোনো খাবার নিয়ে হয়নি। তার হাজারো ঘরানা, হাজারো পদ্ধতি, আর হাজারো কিসিমের উপকরন। তবে বিরিয়ানির স্বাদ, সবসময় তাতে ঢালা ঘিয়ের ওপর নির্ভর করেনা। কার সঙ্গে কি দেওয়া হলো, আর কতটা , কিভাবে মিশ খেলো, স্বাদ নির্ভর করে সেই অনুপাতের ওপর। যদিও বিরিয়ানি মানেই আমার কাছে মট্‌ন্‌ বিরিয়ানি, কিন্তু এই গরমে মট্‌ন্‌ বেশী খাওয়া যাচ্ছে না।

শনিবার, ১৭ মে, ২০১৪

গোয়ালন্দ স্টিমারের মুর্গি্র সালন্‌

মুজতবা আলীর লেখায় পাবেন সবচেয়ে বেশী। পাবেন আরো অনেক বাংলা সাহিত্যে। যাঁরা ধীরাজ ভট্টাচার্য্যের “যখন পুলিশ ছিলাম” পড়েছেন, তাঁরা মনে করতে পারেন, ধীরাজ ভট্টাচার্য্যও এ রান্নার সুখ্যাত করেছেন প্রান খুলেআমাদের পশ্চিম বাংলার সুন্দরবনের দিকেও এ রান্নার চল আছে। কিন্তু ডাঙার মানুষ এ রান্না রাঁধে না। এ হলো একান্তই জলের মাঝি মাল্লার রান্না। শুনেছি অনেক এই মুর্গির ঝোলের কথা, কিন্তু কোথাও এ রান্নার পাকপ্রনালী পাইনি। যেহেতু গোয়ালন্দ স্টিমারে পাওয়া যাবার কারনেই এই পদের এত নাম, তাই আমি সেই নামই রাখলাম।